নওগাঁর মান্দায় পিন নম্বর জটিলতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তলোন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো সময় মেসেজ পিন নম্বর তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের।
একাধিক অভিভাবক জানান, নগদ-এ উপবৃত্তির টাকা পাঠানোর সময় উত্তোলনের পিন নম্বর মেসেজে দেওয়া হয়নি। এতে টাকা তুলতে পারছেন না তারা। কারও পিন নম্বর জানা থাকলেও, তা সঠিক নয় বলে ফিরতি মেসেজ আসছে। পিন নম্বর পুনরায় দিতে (রিসেট) গেলে শেষ ৩ মাসের লেনদেনের মোবাইল সিম নম্বর জানতে চায়।
কিন্তু অনেকের নগদ অ্যাকাউন্টে কোনো লেনদেন করা হয়নি। তাই বিকল্প প্রস্তাবে (অপশন টু) গেলে ‘সামথিং ওয়ান্ট রং, প্লিজ কল ১৬১৬৭ ফর ইনফরমেশন’ দেখাচ্ছে। কিন্তু ওই নম্বরে বহুবার চেষ্টা করেও কল যায় না, ব্যস্ত দেখায়।
উপজেলার ১০০ নং সাহাপুর ঢোলপুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিউলি আক্তার জানান, তার মোবাইল ফোনে নগদ অ্যাকাউন্ট করা থাকলেও মেসেজে পিন নম্বর আসে না। পিন নম্বর পুনরায় (রিসেট) দিতে গেলে ভুল দেখিয়ে কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে বলে। কিন্তু কাস্টমার কেয়ারের নম্বরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায় না। একই অভিযোগ করেন উপজেলর কসব ইউপির তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামের অভিভাবক আমিনুল ইসলামের।
এদিকে ভোগান্তির শিকার অনেক অভিভাবক বিদ্যালয়ে ভিড় করছেন। অনেক সময় অভিভাবকের সঙ্গে শিক্ষকের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনাও ঘটছে। এতে বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক অভিভাবক নগদ-এর এজেন্টের কাছে গিয়ে পুনরায় পিন নম্বর (রিসেট) তৈরি করতে পারছেন না।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হয়েছে। গত বছরে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নগদ-এর মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ জন্য চাহিদা অনুযায়ী প্রত্যেক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নম্বরসহ তথ্য পাঠানো হয়। সেই নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্টও খোলা হয়।
চলতি বছরের শুরু থেকে নগদ-এর মাধ্যমে টাকা পাঠানো শুরু করে সরকার। উদ্দেশ্য ছিল, সুবিধাভোগীরা সহজেই বাড়ির পাশের এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা তুলতে পারবেন। কিন্তু বর্তমানে টাকাই তুলতে পারছে না বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকেরা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবুল বাশার শামসুজ্জামান জানান, ‘অভিযোগ পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। যাঁরা টাকা তুলতে পারেননি, তাঁদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
নগদ-এর এরিয়া ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ধরনের অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে নতুন করে তথ্য চেয়েছি। তথ্য পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, এ বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেননি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply